ইব্ন আব্বাস (রা) হইতে ধারাবাহিকভাবে ইউসুফ ইব্ন মিহরান, আলী ইবন যায়িদ, হাম্মাদ ইব্ন সালমা, আফফান ও ইমাম আহমাদ (র) বর্ণনা করেন যে, ইব্ন আব্বাস (রা) বলেন : ঋণের আয়াত নাযিল হওয়ার পর রাসূলুল্লাহ (সা) বলেন, ধারকর্য বা লেন-দেন চুক্তি করিয়া হযরত আদম (আ)-ই সর্বপ্রথম উহা অস্বীকার করেন। কেননা আল্লাহ তা'আলা আদম (আ)-কে সৃষ্টি করিয়া তাহার পৃষ্ঠদেশে হাত বুলাবার পরে কিয়ামত পর্যন্ত তাহার যত সন্তান-সন্ততি হইবে সব বাহির হইয়া আসে এবং সেই সকল সন্তানকে তাহার সামনে উপস্থিত করা হয়। তিনি উহাদের মধ্য হইতে একজনকে অত্যন্ত সুশ্রীকায় দেখিতে পান। অতঃপর আল্লাহর নিকট জিজ্ঞাসা করেন যে, হে প্রভু! এই ব্যক্তি কে ? তিনি বলেন, এই হইল তোমার পূত্র দাউদ! তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, ইহার বয়স কত হইবে ? আল্লাহ বলিলেন, সত্তর বৎসর। আদম (আ) বলিলেন, হে প্রভু! ইহার বয়স বাড়াইয়া দিন। আল্লাহ বলিলেন, না তাহা হয়না, হয়ত তোমার বয়স হইতে তাহাকে কিছু দিতে পার। আদম (আ)-এর বয়স ছিল এক হাজার বৎসর। অতঃপর তাঁহার বয়স হইতে তিনি দাউদকে চল্লিশ বৎসর দান করেন। ইহা লিখিয়া নেয়া হয় এবং ফেরেশতাদেরকে সাক্ষী মানা হয়। কিন্তু যখন আদম (আ)-এর নিকট মৃত্যুর ফেরেশতা জান কবযের জন্য উপস্থিত হন, তখন তিনি তাহাকে বলেন, আমার তো বয়স এখনও চল্লিশ বৎসর বাকী আছে। তদুত্তরে তাহাকে বলা হয়, কেন, আপনি তো আপনার পুত্র দাউদকে আপনার বয়স হইতে চল্লিশ বৎসর দান করিয়াছিলেন। তিনি বলেন, এমন কোন ঘটনা ঘটে নাই। অতঃপর তাহাকে সেই দলীল-পত্র দেখান হয় এবং সেই ফেরেশতাদেরকে সাক্ষী হিসাবে পেশ করা হয়।
হাম্মাদ ইব্ন সালামা (র) হইতে আসওয়াদ ইব্ন আমেরের বর্ণনায় ইহাও বর্ণিত হইয়াছে যে, আল্লাহ তা'আলা দাউদ (আ)-কেও একশত বৎসর জীবিত রাখিয়াছিলেন এবং আদম (আ)-এর বয়স এক হাজার বৎসর পূর্ণ করিয়া দেওয়া হইয়াছিল।
হাম্মাদ ইব্ন সালামা (র) হইতে ধারাবাহিকভাবে আবূ দাউদ তায়ালুসী, ইউসুফ ইব্ন আবূ হাবীব ও ইব্ন আবূ হাতিমও এইরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। তবে হাদীসটি অত্যন্ত দুর্বল। কেননা ইহার একজন বর্ণনাকারী আলী ইব্ন যায়েদ ইবন জাদআন প্রত্যাখ্যাত রাবী বলিয়া গণ্য ।
তাফসীর ইবনে কাসীর (২য় খন্ড) ; পেইজ ৪১৪